নবজাতকের ত্বক খুবই নাজুক এবং সংবেদনশীল হওয়ার কারণে সহজেই বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে। এর মধ্যে ডায়াপার র্যাশ একটি সাধারণ কিন্তু অস্বস্তিকর সমস্যা। ডায়াপার র্যাশ নবজাতকের জন্য অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে, তবে কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডায়াপার র্যাশের কারণ
ডায়াপার র্যাশের অনেক কারণ থাকতে পারে। নিচে কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হলো:
আর্দ্রতা: ডায়াপার দীর্ঘ সময় ধরে ভেজা থাকলে নবজাতকের ত্বকে আর্দ্রতা জমে যায়, যা ত্বকের প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং ডায়াপার র্যাশের কারণ হতে পারে।
প্রবাহিত ত্বক: ডায়াপারের ঘর্ষণ ত্বকের উপর প্রদাহ সৃষ্টি করে। নবজাতকের ত্বক খুবই নাজুক হওয়ায় ঘর্ষণে ত্বকের সুরক্ষা কমে যায় এবং র্যাশ হয়।
কেমিক্যাল সংস্পর্শ: ডায়াপারে ব্যবহৃত কিছু কেমিক্যাল যেমন সুগন্ধি, ডিটারজেন্ট, এবং ওয়াইপসে থাকা কেমিক্যাল ত্বকের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারে এবং র্যাশের সৃষ্টি করতে পারে।
ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাল সংক্রমণ: ডায়াপারের ভেতরের উষ্ণ এবং আর্দ্র পরিবেশ ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাসের বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত। এটি ত্বকে সংক্রমণ এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে।
নতুন খাবার: নবজাতকের খাদ্যাভ্যাসে নতুন খাবার যুক্ত হলে তার পরিপাকতন্ত্রে পরিবর্তন ঘটে, যা মলের আকার এবং গুণমান পরিবর্তন করতে পারে। এটি ত্বকের সংস্পর্শে এসে র্যাশ সৃষ্টি করতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার: নবজাতক বা তার মা যদি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে, তবে এটি ত্বকের স্বাভাবিক ব্যাকটেরিয়া পরিবেশ পরিবর্তন করে এবং র্যাশের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
ডায়াপার র্যাশ প্রতিরোধ করার জন্য কিছু সাধারণ এবং কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে:
নিয়মিত ডায়াপার পরিবর্তন: নবজাতকের ডায়াপার নিয়মিত পরিবর্তন করতে হবে, বিশেষত প্রতিবার মলত্যাগের পর। এটি ত্বককে আর্দ্রতা এবং মলের সংস্পর্শ থেকে রক্ষা করে।
ত্বক পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখা: নবজাতকের ত্বক সবসময় পরিষ্কার এবং শুষ্ক রাখতে হবে। ডায়াপার পরিবর্তনের সময় হালকা গরম পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে এবং নরম তোয়ালে দিয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।
ডায়াপার মুক্ত সময়: নবজাতককে প্রতিদিন কিছু সময় ডায়াপার মুক্ত রাখতে হবে, যাতে তার ত্বক বাতাসে শুকাতে পারে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয় এবং র্যাশ প্রতিরোধে সহায়ক।
সঠিক মাপের ডায়াপার ব্যবহার: নবজাতকের জন্য সঠিক মাপের ডায়াপার ব্যবহার করতে হবে। টাইট ডায়াপার ত্বকে ঘর্ষণ এবং প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।
ময়েশ্চারাইজার এবং বারিয়ার ক্রিম: নবজাতকের ত্বকে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ডায়াপার পরিবর্তনের পর জিঙ্ক অক্সাইড বা পেট্রোলিয়াম জেলির মতো বারিয়ার ক্রিম ব্যবহার করলে ত্বক র্যাশ থেকে সুরক্ষিত থাকে।
কেমিক্যাল মুক্ত ডায়াপার এবং ওয়াইপস: নবজাতকের জন্য কেমিক্যাল মুক্ত এবং হাইপোঅ্যালার্জেনিক ডায়াপার এবং ওয়াইপস ব্যবহার করতে হবে।
পর্যাপ্ত পানি পান: মায়ের পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত, যাতে তার দুধের মাধ্যমে নবজাতক পর্যাপ্ত হাইড্রেশন পায়। হাইড্রেটেড থাকলে নবজাতকের ত্বক কম সংবেদনশীল হয়।
ডায়াপার র্যাশ একটি সাধারণ সমস্যা হলেও কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করে এটি প্রতিরোধ করা যায়। সঠিক যত্ন এবং পরিচর্যার মাধ্যমে নবজাতকের ত্বককে সুস্থ ও র্যাশমুক্ত রাখা সম্ভব।